চট্টগ্রাম-৮ আসন উপনির্বাচনে প্রচারণার শেষ দিন:
সুষ্ঠু ভোটে মোমবাতির গণজোয়ারকে রুখতে পারবেন না – ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা মতিন।
“কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, জলাবদ্ধতা দূর, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও স্বাচ্ছন্দ্য ব্যবস্থায় পরিকল্পিত উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার অধ্যক্ষ সামাদের”
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন বলেছেন, চট্টগ্রাম-৮ আসন উপনির্বাচনে মোমবাতির প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠু ভোটে মোমবাতির গণজোয়ারকে রুখতে পারবেন না। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতীত এখনও উৎসবের আমেজ আছে। পেশীশক্তি নির্ভর কুচক্রী মহল নির্বাচনের এ আমেজ নষ্ট করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। যারা জনগণের গণরায়কে ভয় পায়, তারা ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমরা জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অনেকদিন আপনারা ক্ষমতায়, জনগণ আপনাদের প্রতি কী মনোভাব লালন করে তা একবার সুষ্ঠু ভোট দিয়ে দেখুন। তিনি আরো বলেন, আমরা অবৈধ সুযোগ নিয়ে রাত্রে ভোটেরও আবেদন করছি না বা দিনের বেলায় জোর করে ভোট নিতে দাবি করছি না। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যেখানে জনগণকে স্বাচ্ছন্দ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সরকার সদিচ্ছা ও ইসির নিরপেক্ষতা প্রমাণের এটাই সর্বশেষ সুযোগ। “নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়, দলীয় সরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়”- এ অভিযোগ থেকে ইসি ও সরকার বের হয়ে আসে কিনা তা দেশবাসী দেখতে চায়। আমি অত্র এলাকার অবহেলিত জনগণকে মোমবাতি প্রতীকে আমাদের প্রার্থী ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
চট্টগ্রাম-৮ আসন উপনির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশ সমর্থিত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ আল্লামা স.উ.ম আবদুস সামাদের মোমবাতি প্রতীকের ৩টি পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান এম এ মতিন এসব কথা বলেন।
আজ (২৪এপ্রিল) সোমবার দুপুর-২:৩০ঘটিকায় অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদ প্রচারণার সর্বশেষ দিনে বহদ্দারহাট মোড়ে পথসভার মাধ্যমে গণসংযোগ শুরু করে চান্দগাঁও সিডিএ আবাসিক, খাজা রোড, বলিরহাট, ষোলশহর, হামজাবাগ, সিএন্ডবি, রাস্তারমাথা, কামাল বাজার, কালুরঘাট, বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ ইউপি, সারোয়াতলী ইউপিতে ব্যাপক গণসংযোগ করেন। হাজার হাজার জনতার অংশগ্রহণে গণসংযোগ গণমিছিলে রূপ নেয়। এসময় মোমবাতির স্লোগানে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়।
এসময় তিনি বলেন, জনগণ পরিবর্তন চায়, তাই চট্টগ্রাম-৮ আসনের সর্বত্র আমাদের প্রতি ভোটারগণ সমর্থন দিচ্ছে। কয়েকটি স্থানে সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ভোট কেন্দ্রে না যেতে হুমকি-ধমকি দিলেও নির্বাচন কমিশন ও সরকার আন্তরিক হলে এখনও সুষ্ঠু ভোট সম্ভব। এজন্য সাংবাদিকদের নিয়মের বেঁড়াজালে বন্দি না করে অবাধ তথ্য সম্প্রচারের সুযোগ দিন। জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দিন। অনিয়ম পরিলক্ষিত করার জন্য সিসি টিভি ক্যামেরা দেওয়ার জন্য বলেছিলাম, আপনারা দেন নি। অন্ততপক্ষে, গোপন বুথে অবাঞ্চিত লোকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করুন। গোপন বুথে যেন কোন ভূত না থাকে নিশ্চিত করুন। আমরা অবৈধ সুযোগ চাই না, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তিনি ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, কালুরঘাট সেতু শুধু বোয়ালখালীর দুঃখ নয়, পুরো চট্টগ্রামবাসীর দুঃখ। এটিকে আমরা জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করেছি। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগে যে ১০ দফা দাবির ভিত্তিতে মহাসমাবেশ করেছে, তৎমধ্যে অন্যতম দাবি কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন। দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতায় থেকেও কালুরঘাট সেতুর ব্যাপারে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি করতে পারে নি। আমি নির্বাচিত হলে কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নে চেষ্টা করব। অল্পসময়ে দৃশ্যমান কিছু অগ্রগতি অবশ্যই করব। বোয়ালখালী থেকে শহরে রোগী পরিবহন ও চিকিৎসা গ্রহণ করা অনেক কষ্টসাধ্য। তাই বোয়ালখালী উপজেলা হাসপাতালকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করব। নির্বাচনী এলাকার মহানগর অংশে জলাবদ্ধতা নিরসনে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করব। বোয়ালখালীর পশ্চিমাংশ-কালুরঘাট হতে ট্যাক্সঘর হয়ে মিলিটারিপুল পর্যন্ত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে উদ্যোগ নেব। অসহায়, এতিম, পথশিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আবাসিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করব। জনবহুল সবগুলো ইউনিয়নে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে আরো একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নেব। বোয়ালখালীতে হবে বিশেষায়িত ১টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। কালুরঘাট সেতু থেকে রাঙ্গুনিয়া পর্যন্ত নদীর ধারে ধারে পর্যটন ও শিশু বিকাশ কেন্দ্র করব। বরাদ্দকৃত সম্পূর্ণ অর্থ ব্যয় হবে জনগণের জন্য। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, যৌতুক, নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ, কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ন্য ও ইভটিজিং বন্ধে সামাজিক-রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর সাথে সমন্বয় করে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ভিত্তিক সেল গঠন করে অপরাধগুলো নিমূর্লে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবো। তিনি অন্যান্য প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আসুন আমরা ভোটকে যুদ্ধ নয়, উৎসবে পরিণত। সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে নজির স্থাপন করি।

গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস হযরতুল আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফি (মঃজিঃআঃ) প্রমুখ দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা ও ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
